পদ্মায় জেলের জালে বিলুপ্তপ্রায় বাওস

ক্র্যাবনিউজবিডি ডেস্ক :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মা নদীতে প্রায় ৩ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ৩ ফুট লম্বা একটি সামুদ্রিক বাওস মাছ ধরা পড়েছে। এ ধরনের মাছ এই অঞ্চলে খুব বেশি দেখা যায় না।
মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর করনেশনা কলাবাগান এলাকার অদূরে পদ্মা নদীতে স্থানীয় মৎস্যশিকারি বাচ্চু শেখের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
পরে মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়ার বাইপাস সড়কের পাশে দুলাল শেখের আড়তে নেয়া হয়। দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও শাকিল-সোহান মৎস্য আড়তের মালিক শাহজাহান শেখ উন্মুক্ত নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে মোট ৩ হাজার ৫২০ টাকায় মাছটি কিনে নেন। এ সময় মাছটি দেখতে ফেরিঘাট এলাকায় অনেকে ভিড় করেন।
এই মাছ সম্পর্কে ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ বলেন, ‘এই মাছের আসল নাম বাওস হলেও স্থানীয়ভাবে আমরা এটাকে ‌‌বাঙ্গোশ বলে থাকি। এ মাছ সাধারণত সমুদ্রে পাওয়া যায়। কিন্তু বছরের আষাঢ়–শ্রাবণ মাসের দিকে মাঝে মাঝে পদ্মায় মাছটি পাওয়া যায়। মাছটি খুবই সুস্বাদু। মাছটি পরিবার–পরিজনদের নিয়ে খাওয়ার জন্য কিনেছি। অনেকে বেশি দাম দিয়ে আমার কাছ থেকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আমি বিক্রি করিনি।’
গোয়ালন্দ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল শরীফ বলেন, আঞ্চলিক ভাষায় এটিকে বাঙ্গোশ বললেও মূলত এই মাছের নাম বাওস। এটি সামুদ্রিক মাছ। সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে এসব মাছ মাঝেমধ্যে ধরা পড়ে। বাওস মাছ প্রায় ১০ কেজি পর্যন্ত ওজনের হতে পারে। মাছটি অনেক সুস্বাদু ও দামি হয়।
এই বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ ধরনের সামুদ্রিক মাছ বিলুপ্তপ্রায়। দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ সংরক্ষণের জন্য আমরা কুশাহাটা এলাকার তিনটি বদ্ধ জলমহালে অভয়াশ্রম করতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। যদি করতে পারি তাহলে এ ধরনের অনেক মূল্যবান মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।’
মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, সাধারণত এ ধরনের মাছ বা বাওস মাছ এই অঞ্চলে খুব বেশি একটা দেখা যায় না। গোপালগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ বা সিলেট অঞ্চলে পাওয়া যায়। পদ্মা নদী যখন উত্তাল থাকে তখন মাঝেমধ্যে এ ধরনের মাছের দেখা মেলে। দেশে প্রায় ৭৫৯ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রে পাওয়া যায় প্রায় ৪৭৫টি প্রজাতি।